নিজস্ব প্রতিবেদক
চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর পৌরসভার বাগানপাড়া মহল্লায় তাহমিনা বেগম নামে এক মা ৪৫বছর আগে ২ জন প্রতিবন্ধী ছেলের জন্ম দিয়েছেন। তাদের নাম রেখেছেন ওলি ও আব্দুর রহিম।বড় ছেলে ওলি বয়স ৪৫বছর এবং ছোট্ট ছেলে রহিম বয়স ৪০এর উপরে তারা মধ্যবয়সের হলেও তাদের আচার, আচরণ,চলাফেরা সেই ছোট্র শিশুর মতো। তাদের বুদ্ধির বিকাশ না হওয়াতে গায়ে পোষাখ রাখতে চাইনা তারা।পারেনা নিজেদের যত্ন নিতে, পারেনা নিজের খাবার নিজে খেতে।
জানা যায় তারা দুজনেই মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক বিকাশ বা সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্তের কারনে এমনটা হয়েছে মাথায় মগজ কম হওয়ায় তাদের বুদ্ধি শিশুর মতো সেই কারনে ওলি, রহিম খেলতে পছন্দ করে।৪৫ বছরের জীবনে তাদের দেখভালের একমাত্র সঙ্গী তাদের মা। তাদের পোষাক পরানো, গোসল করা, খাবার খাইয়ে দেওয়া,পস্রাব-পায়খানা পরিস্কার সহ যাবতীয় কাজ করতে হয় মা কে। তাদের বাবা জীবিত নেই,বাবা থাকতে বাবার অদম্য শক্তি ও সাহসের অনুপ্রেরণা নিয়ে হাসিখুশি থাকতেন মা। কিন্তু ১০ বছর আগে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয় বাবা সকল দ্বায়িত্ব রয়ে গেলো মায়ের হাতে, তারপরেও মা নিরাশ হয়ে যাননি চালিয়ে যাচ্ছেন দুই ছেলেকে নিয়ে জীবন যুদ্ধ।
বড় ছেলে ওলিকে বাবার কথা মনে করালে বা বাবার মৃত্যুর কথা বললেই বাবার জন্য কান্না করেন সেটি উপলব্ধি করতে পারেন তার মা এবং মায়ের ডাকেই সাড়া দেই ওলি মাকে অনেক ভালোবাসে সেটিও বুঝতে পারেন মা। কিন্তু ছোট ছেলে রহিম একটু আলাদা তার সে জ্ঞান টুকুও নেই।
ওলি ও রহিমের মা তাহমিনা বেগমের বলেন ওদের বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে প্রতিবন্ধী ছেলেদের রেখে একদিনের জন্যও যেতে পারেন নি কোন আত্মীয় স্বজনদের বাড়ী এমনকি যেতে পারেন নি কোন মৃত ব্যক্তিকে দেখতে, তাদেরকে নিয়েই একাকিত্ব জীবন কাটাচ্ছেন মা। ওলি ও রহিম এর মা এর বয়স ৬৭ ছেলেদের প্রতিবন্ধী ভাতা পেলেও তিনি পাচ্ছেন না বয়স্ক ভাতা বা বিধবা ভাতা-সে এখন হার্ট ও শাসকষ্টের রোগী তার আকুতি সে মারা গেলে তার প্রতিবন্ধী ছেলেদের দেখভাল করবে কে? কার কাছেই বা পাবে ঠাই? এগুলা ভেবে ভেবে ছেলে দুটোকে বুকে নিয়ে প্রতি রাতেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মা। তিনি বলেন সরকার যদি আমার এই ছেলেগুলোর কোন ব্যবস্থা নেয় তাহলে হয়তো আমার চিন্তাটাও একটু কমবে।
সট--এ বিষয়ে গোমস্তাপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার জাহাঙ্গীর আরিফ বলেন ওলি ও রহিমকে প্রতিবন্ধী ভাতার অন্তর্ভুক্ত করা আছে তারা প্রতিমাসে ৯০০ টাকা করে প্রতিবন্ধী ভাতা পান এবং তার মায়ের বিধবা ভাতা চালু করে দিবো এবং সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ভিক্ষুক পুণর্বাসন নামে যে প্রকল্পটি চালু আছে সেখান থেকে যেকোন একটি আয় বর্ধক কাজের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করবো।